Ratsasan (উচ্চারণ “রাতচসান”) রাম কুমার পরিচালিত ২০১৮ সালে মুক্তি পাওয়া ভারতীয় তামিল-ভাষার সাইকো থ্রিলার চলচ্চিত্র। ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন বিষ্ণু বিশাল ও আমলা পল, অন্যদিকে সারওয়ানান, কালী ভেঙ্কট এবং রামডোস অভিনয় করেন গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক চরিত্রে। এই ছবিতে একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী চলচ্চিত্র লেখকের গল্প বলা হয়েছে, যিনি তার বাবার মৃত্যুর পরে একজন পুলিশ অফিসার হয়েছিলেন এবং স্কুল ছাত্রীদের হত্যাকারী এক সিরিয়াল কিলারকে সনাক্ত করতে লড়ে যান।
ফিল্মমেকার হওয়ার উচ্চ স্বপ্নে বিভোর অরুন কুমারের হাতে দারুন ম্যুভি স্ক্রিপ্ট থাকা স্বত্ত্বেও একের পর এক প্রযোজকদের তেকে প্রত্যাখিত হয়। সাইকোপ্যাথ নিয়ে বিশেষ আগ্রহ থেকে পত্র-পত্রিকা ঘাটিয়ে বিভিন্ন রহস্যজনক মৃত্যুগুলো রহস্যজট খুলতে ভালবাসত সে। এই নিয়েই লিখে ফেলেছিল তার স্বপ্নের ম্যুভির চিত্রনাট্য। বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের আর্থিক দোটানায় শেষমেষ বেছে নিল পুলিশের চাকরি। তার পুলিশে চাকরি করা দুলাভাইর রিকমেন্ডেশনে ভর্তি হল সাব-ইন্সপেক্টর পদে। চাকরির সুবাদে তাঁর বোনের বাড়িতে গিয়েই উঠতে হয় তাকে।
পুলিশের চাকরিতে প্রবেশ করতে না করতেই জড়িয়ে পড়ল এক রহস্যজনক কেসের সমাধানে। ফিল্মের জন্যে সাইকোপ্যাথ নিয়ে গবেষণা করা অরুন চাকরিতে এসেই পেয়ে গেল ক্লুবিহীন খুন হওয়া এক রহস্যজনক কেস। খুনের মোটিভ দেখে সন্দেহ হল কোনো সাইকোপ্যাথই এমন খুন করতে পারে। দুইদিন ধরে হারিয়ে যাওয়া এক স্কুল বালিকাকে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া গেল সুয়ারেজের পাইপে, হত্যা করা হয়েছে খুবই নৃশংস ভাবে। খুনীর ঘরে গিফট বক্সের ভিতরে বিকৃত এক পুতুল পাওয়া যায়। অরুন যতই তার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বোঝাতে চায়, খুনী কোনো সাধারণ কেউ না, সাইকোপ্যাথ, সিনিয়রিটির ইগোওয়ালা কর্মকর্তারা কর্ণপাতঈ করেন না। আগ্রহবশত একাই কেস সমাধানে নেমে পড়ে অরুন।
অরুনের ভাগ্নি “আম্মু”র রিপোর্ট কার্ডে বাবার সাইন নিজে দিতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলে পরিচিত হয় নায়িকা বিজয়লক্ষ্মীর সাথে। বিজয়লক্ষ্মী তাঁর সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত বোনের বোবা মেয়েকে নিয়ে সিঙ্গেল মাদার লাইফ কাটায়। প্রথমে অরুনের সাথে কথা কাটাকাটি থেকে পরিচয় হলেও পরে তার ব্যবহার ও কর্মকান্ডে তারা খুব ভাল বন্ধু হয়ে যায়।
এদিকে এক খুনের রহস্য সমাধান করতে না করতেই একইভাবে আরেক স্কুলপড়ুয়া মেয়ে কিডন্যাপ ও খুন হয়ে যায়। এবারও একই মোটিভ, এবারই অরুন তার উচ্চপদস্থ অফিসারকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়। খুনের ক্লু ধরে এগোতে এগোতে অরুন পৌছে যায় ওই স্কুলেরই এক টিচার পর্যন্ত যে কিনা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় কম নম্বর দিয়ে তার সাথে অনৈতিক কর্ম করতে বাধ্য করত। অরুন যখন তার কাছে পৌছে যায়, তখন ওই শিক্ষক তার ভাগ্নীকেই ব্ল্যাকমেইল করছিল। পিটিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করার পর জিজ্ঞাসাবাদে তার মধ্যে খুন করার সন্দেহজনক মোটিভ পাওয়া যায় না। হাসপাতালে থাকাকালীন এক পুলিশের মাথায় গুলি তাক করে পালানোর সময় অরুনের হাতে মারা পড়ে সে।
ইউটিউবে হিন্দীতে ডাবিংকৃত Ratsasan দেখুন এই লিংকে গিয়েঃ http://bit.ly/2UknVwr
অস্ত্রের অনৈতিক ব্যবহারে ৩ মাসের জন্যে সাসপেন্ড হয় অরুন৷ অন্যদিকে সাইকোপ্যাথের এবারের শিকার হয় তারই ভাগ্নী আম্মু৷ ক্লু এর অভাবে কেস যখন অন্যদিকে মোড় নিচ্ছিল, তখন আগের শিকার এক মেয়ের রেকর্ডিং ক্ষমতা সম্পন্ন হেডফোন থেকে কিছু বাদ্যযন্ত্রের শব্দ ক্লু হিসেবে পায়। এই ক্লু ধরেই অরুন বের করে ফেলে সাইকোপ্যাথের নেক্সট টার্গেটকে।
এই টার্গেট ধরে কি পাওয়া যাবে খুনীকে, আর খুনী কেনোই বা এই পথ বেছে নিল, এরকম মিশ্রণ রয়েছে ম্যুভির বাকি অংশে। একবার দেখতে বসলে না শেষ করে উঠতে মন চাইবে না৷ তাই আড়াই ঘন্টা হাতে নিয়ে বসবেন অবশ্যই। এই ম্যুভি দেখতে দেখতে এতদিন কেন দেখেননি, এইই আফসোস হবে। তাই এই আফসোস আর বেশিক্ষন বাড়তে দিয়েন না। এখনই এক বসায় দেখে ফেলুন ইন্ডিয়ার সেরা এই সাইকোপ্যাথ থ্রিলার।
পড়ুন আরেকটি একশন থ্রিলার রিভিউ নেটফ্লিক্স ওয়েবসিরিজ রিভিউ TYPEWRITER